সময় সংবাদ লাইভ রিপোর্টঃ রাজধানীর কাফরুলে সীমা বেগম (৩১) নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যার পর আগুন দিয়ে তার লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় সীমার সৎ ছেলে এসএম আশিকুর রহমান নাহিদকে গ্রেফতার করা হলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গতকাল সোমবার বিকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসী আসামী নাহিদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
একইসঙ্গে এ ঘটনায় গ্রেফতার আরও ৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার আরেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর রহমান। এই পাঁচ আসামী হলো-জাকিয়া সুলতানা আইরিন (২২), আসেক উল্লা (৫০), রোকেয়া বেগম (৪০), শাহজাহান শিকদার (৫০) ও সাকিব (২০)। আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক সারিফুজ্জামান আসামীদের আদালতে হাজির করেন। এরপর আসামী আশিকুর রহমান নাহিদ স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক নাহিদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। মামলায় গ্রেফতার আরও ৫ আসামীকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, রোববার সকাল আনুমানিক ১১টায় কাফরুল থানার পূর্ব বাইশটেক এলাকার একটি বাসা থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে প্রথমে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। পরে তার লাশ আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির সূত্রে জানা গেছে, রাত ৮টার দিকে সীমার লাশ ঢামেকে নিয়ে আসা হয়। বিছানার ওপরে উপুড় অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। তার পিঠে একাধিক ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। বিছানা পুড়ে গেছে। তার শরীরের পেছনের দিকের অংশ পোড়া ছিল।
জানা যায়, নিহত সীমার স্বামীর নাম শাজাহান সিকদার। এটি ছিল সীমার দ্বিতীয় বিয়ে। তার এই বিয়ে হয়েছিল ৩-৪ মাস আগে। সীমার লাশ উদ্ধারের পর তার ভাই বাদী হয়ে কাফরুল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। শাহজাহান শিকদার একটি কার্টন ফ্যাক্টরির কর্ণধার। ইমাননগর সমিতি এলাকায় একটি ১০তলা ভবনের সাততলায় দ্বিতীয় স্ত্রী সীমা বেগমকে নিয়ে থাকতেন শাহজাহান। তাদের পাশের ফ্ল্যাটেই শাহজাহান শিকদারের ছেলে থাকেন সস্ত্রীক। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধৃত করে পুলিশ জানায়, দুই পরিবারের ঝগড়াঝাঁটি হয়েছিল। তাদের আশঙ্কা, সে কারণেই সীমাকে খুন করা হয়।
ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আ স ম মাহাতাব উদ্দিন জানান, সীমা নামের ওই নারীকে কুপিয়ে হত্যা করে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়। কাফরুল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেলিমুজ্জামান বলেন, গতকাল উত্তরখান থানা এলাকা থেকে এস এম আশিকুর রহমান নাহিদকে গ্রেফতার করা হয়। একই দিন ভোর ৪টায় কাফরুলের ইমান নগর ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাকিয়া সুলতানা আইরিন, আসেক উল্লা, রোকেয়া বেগম, শাহজাহান শিকদার ও সাকিব এই পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।